Friday, February 2, 2018

সাইকোলজিক্যাল টিপস-৩৯: কেন আমরা অসুখী?

পর্ব-১:
" নিজে যে অবস্হায়ই থাকি না কেন আমি উৎফুল্ল থাকতে ও সুখী থাকতে দৃড় প্রতিজ্ঞা বদ্ধ।কেননা আমি জানি আমাদের দুঃখ- কষ্ট বা অসুখী থাকার বেশীর ভাগই নির্ধারিত হয় আমাদের নিজস্ব " স্বভাব/ প্রবনতার" উপর - পরিস্হিতির উপর নয়।"

---কথাগুলো বলেছেন আমেরিকার প্রথম প্রেসিডেন্ট  জর্জ ওয়াশিংটন এর স্ত্রী মার্থার।

এটা নিঃসন্দেহ আমরা সবাই সুখী থাকতে চাই।

মানুষ হিসেবে এটা আমাদের মেনে নিতে হবে যে ক) জীবন হচ্ছে ছোট এবং খ)  অসুখী থাকলে আমাদের এই ছোট জীবন আরো কঠিন হয়ে পড়বে।

আমাদের গুনগত উন্নত জীবনের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে আমাদের স্বভাব বা প্রবনতা।এই স্বভাব গুলো আমাদের অসুখী করে কিংবা সুখী করে।

আজকের টিপসে এমন কিছু স্বভাবের কথা বলবো যা আমাদের অসুখী করে।

মনে রাখতে হবে " বিষন্নতা রোগ" বা ডিপ্রেশন ও "অসুখী জীবন- যাপন" এক বিষয় নয়।

বিষন্নতা হয় ব্রেইনের জৈব-রাসায়নিক  ভারসাম্যহীনতার কারনে। অন্য দিকে অসুখী বা সুখী থাকা হচ্ছে এমন মানসিক অবস্হা বা প্রবনতা/ স্বভাব- যা অর্জিত হয় কিভাবে আমরা জীবন যাপন করার সিদ্ধান্ত
নেই তার উপর নির্ভর করে।

সুখের কথা বিষন্নতাকে যেমন আমরা ডায়গনসিস ও চিকিৎসা করতে পারি, অসুখী থাকাকে ও তেমনি চিকিৎসা করতে পারি।

আমাদের অসুখী করে তেমন ১২টি স্বভাবের কথা পর্যায়ক্রমে বলবো।আজ উল্লেখ করছি তেমন দুটি স্বভাবের :

যে স্বভাবগুলো আমাদের অসুখী করে অথচ যা চাইলে আমরা এড়িয়ে চলতে পারি --

১। সব সময় অভিযোগ, অনুযোগ, নালিশ করার স্বভাব -( Chronic complaining):

সুখী মানুষ অতিরিক্ত অভিযোগ, নালিশ করে না।অন্য দিকে অসুখী মানুষরা সব সময় কোন না কোন বিষয় নিয়ে অভিযোগ করতেই থাকেন।

মূল কথা হচ্ছে:

সারা জীবন আমরা বিভিন্ন পরিস্হিতিতে থাকবো কিন্তু সবশেষে এ পরিস্হিতিগুলো আমাদের ;

তা সেগুলো ন্যায্য হোক বা অন্যায্য ; কাঙ্খিত হোক বা অনাকাঙ্ক্ষিত।

তাই সমস্যার  সমাধানের চেষ্টা করুন - এসবের বিরুদ্ধে অভিযোগ, নালিশ করার পরিবর্তে।

কেননা নিরন্তর অভিযোগ  আপনাকে / আমাকে কোথাও নিয়ে যেতে পারে না

২। নিজের প্রতি বা অন্যের প্রতি সমালোচনাপূর্ন থাকা (being critical of self and others) :

আমরা নিজেদের সঙ্গে নিজেরা কি ধরনের কথা বলি,সংলাপ করি(self-talk),তা নির্ধারন করে আমাদের আত্ম- ভাবমূর্তি ( সেল্ফ ইমেজ)।

এই আত্ম সম্মান বোধ আমাদের সুখী হওয়ার অন্যতম উপাদান এবং নিজকে নিয়ে ভালো লাগা বোধ হচ্ছে সঠিক স্বভাব ও প্রবনতা।

যখন ভুল করবেন সেটি বোঝার ও মেনে নেওয়ার চেষ্টা করবেন এবং সম্মুখ পানে এগিয়ে যাবেন--

কখনোই এ সব নিয়ে নিজের সঙ্গে,মনে মনে নেতিবাচক সংলাপ চালিয়ে যাবেন না।

তদুপরি অন্যদের মধ্যে যে ভিন্নতা রয়েছে, পার্থক্য রয়েছে - সেগুলোকে শ্রদ্ধার চোখে দেখুন এবং তাদের অধিকারকে স্বীকৃতি দিন।

এরচেয়ে ও গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে নিজকে আসামীর কাঠগড়ায় দাড় না করানো।

নিজকে অতিরিক্ত অভিযুক্ত করবেন না-- নিজের দোষ- ক্রটি, অযোগ্যতা নিয়ে হীনমন্যতায় ভুগবেন না।

বরং
নিজকে ভালোবাসুন,নিজকে শ্রদ্ধা করুন,নিজকে নিঃশর্ত ভাবে গ্রহন করুন।

  এভাবে নিজকে ও অন্যদেরকে অনাবশ্যক সমালোচনা করার স্বভাব যদি বদলাতে পারেন -- কেবল তাহলেই সুখী হতে পারবেন

(২য় পর্ব- আগামীকাল)

No comments:

Post a Comment