সিজোফ্রেনিয়া নিয়ে আলোচনা চলছিল। অনেকের অনুরোধে গুরুত্বপূর্ণ মানসিক রোগগুলো নিয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনার চিন্তা করছি।
সিরিজের নাম হবে : সাইকোলজিক্যাল ডিসঅর্ডার সিরিজ( pds)
আজ শুরু করছি-- মাদকাসক্তি দিয়ে
( কেননা দেশ ব্যাপী চলছে মাদকের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযান /যুদ্ধ)
## আমি মাদকাসক্তির উপর ২টি বই লিখেছি
১। মাদকাসক্তি : একটি নিরাময়যোগ্য ব্রেইনের রোগ- কারন,চিকিৎসা ও প্রতিরোধের উপায়( এডর্ন- ২০১০সাল)।
এটি দীর্ঘ ৬০০ পৃষ্ঠার বই ছিল।প্রকাশক ফন্ট ছোট করে ও অন্যান্য কারুকাজ করে সাড়ে চার শ পৃষ্ঠায় নামাতে পেরেছে।
এটি মাদকাসক্তির এ-টু- জেড,সব কিছু একত্রে পাওয়ার একটি বই- এমনকি গবেষক, পোস্ট গ্রাজুয়েট সাইকিয়াট্রি/ সাইকোলজিস্টদের জন্য ও
২। মাদকাসক্তির চিকিৎসা সমগ্র - ছোট বই তবে সকল প্রকার চিকিৎসার নির্যাস তুলে ধরার চেষ্টা করেছি
## প্রথম বই থেকে চুম্বক কিছু ধারাবাহিক ভাবে তুলে ধরবো
আজ- পর্ব-১: মাদক নির্ভরশীলতা ও ব্রেইন মেকানিজম
নির্ভরশীলতা ( drug dependency) :
বইয়ের নামই দিয়েছি - মাদকাসক্তি একটি ব্রেইনের রোগ।কেননা প্রথমে স্বইচ্ছায় ড্রাগ নিলেও,পরবর্তীতে এটি নেওয়া,না নেওয়া ব্যক্তির ইচ্ছাধীন থাকে না।এটি গ্রহন তার জন্য বাধ্যতামূলক হয়ে দাড়ায়।
এরকম হওয়ার কারন মাদক তার ব্রেইনে কিছু গঠনগত পরিবর্তন সাধন করে।( পরে তা জানবো)
কিভাবে বুঝবো কেউ মাদকে আসক্ত/ নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন কিনা?
১।ক্রমাগত ভাবে মাদকের ডোজ বাড়াতে থাকে।আগের মাত্রায় খেলে আগের মতন আনন্দ পায় না বা আগের সমান ক্রিয়া পায় না,তাই ডোজ বাড়াতে হয়।একে বলা হয়- টলারেন্স ( সহনশীলতার মাত্রা বেড়ে যাওয়া)
২। মাদক ত্যাগ বা ডোজ কমালে তীব্র প্রত্যাহার জনিত শারিরীক কষ্টকর উপসর্গের সৃষ্টি হয়( উইথড্রল সিম্পটম- তারা বল "বেড়া")
৩। দীর্ঘ দিন ধরে অভ্যাস চালিয়ে যাওয়া ( ক্ষতিকর জেনেও)
৪। ছেড়ে দেওয়ার পরও মাদকের জন্য তীব্র আকর্ষণ থাকা( ২ ও ৪ নং এর জন্য তারা বার বার ও পুনরায় মাদক গ্রহন করে থাকে)
৫।দিনের বেশীরভাগ সময় মাদক সংগ্রহ ( এটি পেতে হলে নির্দিস্ট জায়গা বা মানুষ লাগে);
কেনার জন্য টাকা সংগ্রহ ( মাদক দামী,তাই প্রতিদিন অনেক টাকা হাতে থাকতে হয়,ফলে জোর করে,ধান্ধা করে,প্রতারনা করে, চুরি করে বা ছিনতাই সহ অন্য যে কোন উপায়ে টাকা সংগ্রহ করতেই হয়);
ও তা কোথায় নিরাপদে ব্যবহার করবে--
শুধু এই চিন্তায়ই সারাটি দিন কাটিয়ে দেয়
৬।গুরুত্ব পূর্ন সামাজিক, পেশাগত, বিনোদনমূলক কাজ বাদ দিয়ে থাকে( ৫নং এর জন্য)
৭।মাদকের কারনে তার শারিরীক,আর্থিক, সামাজিক,,পারিবারিক, মানসিক,নৈতিক- সর্ব ক্ষেত্রে অপরিসীম ক্ষতি হচ্ছে তা জানা/বোঝা সত্বেও ঐ নেশা অব্যাহত রাখা
উপরোক্ত ৭টি লক্ষনের মধ্যে যদি ৩টি লক্ষনও কারো থাকে- তাহলে বুঝবেন সে ঐ মাদকের উপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন বা এতে নেশাগ্রস্থ হয়ে পড়েছেন
# যে কোন বিষয়,বস্ত বা ড্রাগের ক্ষেত্রে এরকম নেশা তৈরি হতে পারে।তাই নেশাকে " বস্ত নির্ভরশীলতা( substance dependence) বলা হয় শুধু মাদক নির্ভরশীলতা নয়।
## যাচাই করে দেখুন কোন বিষয়ে,বস্ততে কে কতটুকু আসক্ত হয়ে পড়েছে
( পর্ব- ২ তে কি কি দ্রব্যে নেশা/ নির্ভরশীলতা হয় এবং ব্রেইন মেকানিজম কি- এ নিয়ে আলোচনা থাকবে)
No comments:
Post a Comment