Monday, November 6, 2017

যাহা বলিব সত্য বলিব-৭: পত্রিকা থেকে সবাই জেনেছেন পরকীয়ার বলি হলেন নিজ মেয়ে ও স্বামী। আর এ কাহিনীতে পরকিয়ার ফল হলো প্রেমিকের অন্ধত্ব

কাহিনী সংক্ষেপ :
মুর্শেদ এর বাবা দুই বিয়ে করেন।বাবা জুয়া খেলে সর্বস্বান্ত হয়।মুর্শেদ ঢাকা এসে গার্মেন্টস এ চাকরি নেয়।সেখানে এক মেয়েকে তার ভালো লাগে।কিছুদিন পর জানতে পারে ঐ মেয়ে বিবাহিতা।বিবাহিতা জেনে সে সম্পর্ক থেকে  বের হয়ে আসতে চায়।কিন্তু ঐ মহিলা বলে আমি তোমাকেই বিয়ে করবো।মুর্শেদ " না" বলে।সে দূরে চলে আসে।পরে মুর্শেদের অন্য এক মেয়ের সঙ্গে সম্পর্ক হয় ও বিয়ে হয়।এতে আগের মহিলা বাধা দেয়,সে এটি মেনে নিতে পারেনি।মহিলা বিভিন্ন ভাবে মুর্শেদকে হুমকি দিতে থাকে।

মুর্শেদ গ্রামের বাড়ী গেলে একদিন  ঐ মহিলা তাকে ফোন করে বলে আমি তোমাকে তাবিজ করেছি,এতে তুমি হয় পাগল হবা না হয় মারা যাবা।মুর্শেদ বলেনএ সব ভুয়া,আমার কিছু হবে না।

সে তখন এক ফার্মেসীর দোকানে ছিল।দোকানদার বলে ভুয়া না,এগুলো সত্যি  ,  আমার জানা এক লোক তাবিজে মারা গেছে।এটি শুনে মুর্শেদের শরীরে ঝিম মেরে উঠে,সে ভীষন ভয় পায়।সেভাবে কয়েকটি ঘুমের বড়ি খেয়ে ঘুম দিলে এই খারাপ লাগা কেটে যাবে।তাই সে ঐ ঔষধের দোকান থেকে কিছু ঘুমের ঔষধ চুরি করে এনে খায়।

এর পরই তার জ্বর চলে আসে,মাথায় ভীষণ যন্ত্রনা শুরু হয় ও সেন্সলেস হয়ে পড়ে।তাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়,অনেক চিকিৎসা হয়।কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই সে দৃষ্টি শক্তি হারিয়ে ফেলে।সে পুরোপুরি অন্ধ হয়ে যায়।ঐ ফার্মেসির লোক জানায় ভুল করে সে সেক্স পাওয়ার এর ঔষধ নিয়ে খেয়েছে, ফলে আজ তার এই অবস্হা।

আমার পর্যবেক্ষণ :

১। ঐ  মহিলা বিবাহিত হয়েও মুর্শেদ এর সঙ্গে সম্পর্ক করে ও তা গোপন রেখে।বিবাহিতা জেনে মুর্শেদ সঙ্গত কারনে দূরে  থাকতে চায় ও অন্য এক মেয়েকে বিয়ে করে।কিন্তু ঐ মহিলা এতে ঈর্ষান্বিত হয়ে তাকে তাবিজ করে মেরে ফেলার হুমকি দেয়। আমরা পত্রিকা মারফত জেনেছি  এক বিবাহিতা মহিলা পরকীয়া প্রেমের কারনে প্রেমিকের সহায়তায়  নিজ মেয়ে ও স্বামীকে খুন করে।মুর্শেদ রাজি থাকলে এই মহিলা ও যে তেমন ঘৃন্য কাজ করতো না তা কিভাবে বলি?

২। মুর্শেদ সৎ,বাস্তববাদী মানুষ। প্রেম বা যৌনতার মোহে সে পরকীয়ায় জড়িত হয়নি।কতজন পুরুষ এমন বাস্তব চিন্তা ও নৈতিক সাহস রাখেন?

৩। মুর্শেদ আধুনিক চিন্তার লোক ও।কেননা ঐ মহিলা তাবিজ করে মেরে ফেলার যে হুমকি দেয় সে তাকে ভুয়া বলে জানায়।অথচ ঐ দোকানদারের মতন দেশের বেশীরভাগ মানুষ এমনটি বিশ্বাস করে।

৪। দশ চক্রে ভগবান ও ভূত হয়।মুর্শেদ তাবিজে বিশ্বাস না করলেও ঐ দোকানদারের উদাহরণ শুনে তার বিশ্বাস নড়বড়ে হয়ে উঠে।আমাদের অনেক শিক্ষিত লোক ও জ্বীন- ভুত,তাবিজ ইত্যাদিতো বিশ্বাস করে সামাজিক মিথ হিসেবে এগুলো ধারন করে বলে।বিজ্ঞান ভিত্তিক প্রমানের চেয়ে অন্যরা কি বলে,ভাবে,বিশ্বাস করে সেগুলো আমাদের মনে অধিক প্রভাব বিস্তার করে।তাই সামাজিক মিথ ভাঙ্গা কঠিন।

৫। মূলত মুর্শেদ অন্ধ হয়েছে ভুল ঔষধ অধিক মাত্রায় সেবন করেছে বলে।ঔষধ মানে বিষ- এটি আমরা ভুলে যাই।তাই নিজ ইচ্ছামত বা কোয়াক ডাক্তারদের পরামর্শ মত ভুল ঔষধ সেবন করলে।যেকোন সময় তা বিপদ ঢেকে আনতে পারে অন্ধত্ব সহ যে কোন সঙ্কট এমনকি মৃত্যু

No comments:

Post a Comment