আমাদের দেশে একটি প্রবাদ বাক্য আছে ঃ কথায় চিড়া ভিজে না
কিন্তু আমরা যে সাইকোথেরাপি বা কাউন্সিলিং করি সেগুলো তো মূলত "কথা -চিকিৎসা " বা টক-থেরাপি।
তাহলে সেগুলোতে কি মন ভিজে না? যদি না ভিজে রোগী আরোগ্য লাভ করে কেন?
আমাদের জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট এর একমাত্র ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্ট স্নেহাস্পদ জহিরের সঙ্গে একদিন আলাপের সময় সে বলে-
স্যার,আপনি তো অনেক জায়গায় লিখেন,কথায় ও চিড়ে ভিজে, মানে সাইকোথেরাপি ও কাজ করে, একদিন সে নিয়ে ও একটু লিখবেন।
অনেক দিন হয়ে গেল ব্যাপারটি মনে ছিল না।
আজ "আবেগীয় বুদ্ধিমত্তা " নিয়ে কিছু লিখতে গিয়ে ঐ কথাটি মনে পড়লো।
কথায় ও চিড়ে ভিজে -এর প্রমাণ হিসেবে আমি খাটি বৈজ্ঞানিক গবেষণার ফলাফল তুলে ধরবোঃ
আমরা জানি "ওসিডি" (অবসেসিভ -কম্পালসিভ ডিসঅর্ডারে) বা "খুঁতখুঁতে" রোগের একটি প্রধান লক্ষন হচ্ছে
-অপরিষ্কার, নোংরা, অপবিত্র হয়ে গেছে মনে করে বার বার(কখনো শতবার) ধোঁয়া মোছা করা।
PET scan ( positron emission tomography) করে দেখা গেছে ওসিডির রোগীদের ব্রেইনের "প্রি-ফ্রন্টাল" লোবের কর্মতৎপরতা বৃদ্ধি পায়।তারমানে প্রিফ্রন্টাল লোবের কর্মতৎপরতা কমিয়ে ফেলতে পারলে এ রোগ ভালো হয়ে যাবে।
এই রোগ ঔষধ চিকিৎসায় ভালো হয়,আবার বিহেভিয়ার থেরাপি (এ ক্ষেত্রে "রেসপন্স প্রিভেনশন " থেরাপি) ও সমান উপকারী।
এক গবেষণায় এই রকম একদল রোগীর অর্ধেককে ঔষধ ফ্লুক্সিটিন দেওয়া হয় ও বাকি অর্ধেককে রেসপন্স প্রিভেনশন থেরাপি দেওয়া হয়।
উভয় গ্রপের রোগরাই উন্নতি লাভ করে।
গবেষণার আশ্চর্যজনক ফলাফল হচ্ছে ঃ। pet scan করে দেখা যায়, বিহেভিয়ার থেরাপি দিয়ে ভালো হওয়া রোগীদেরও প্রিফ্রন্টাল লোবের কর্মতৎপরতা কমে গেছে, যেমন হয়ছিল ঔষধ চিকিৎসায় ভালো হওয়া রোগীদের।
তার মানে নিছক চিন্তা, আচরণ বদল করেও ব্রেইনের ফাংশনকে বদলানো যায়।
অতএব প্রমানিত হলো - কথায় ও চিড়ে ভিজে
No comments:
Post a Comment