আমাদের হ্যাপি ফ্যামিলির( বি পজিটিভ বি হ্যাপি গ্রপ) পক্ষ থেকে
সবাইকে জানাই ইংরেজি নব বর্ষের শুভেচ্ছা
( সাইকিয়াট্রিস্ট এর জার্নাল - ৭ এ উন্নত জীবন গঠনের ১০ গাইড লাইনের ২টি দিয়েছিলাম।বাকী গুলো দেওয়ার সময় করে উঠতে পারিনি।তবে সব বিভাগই নিয়মিত চালু থাকবে ইনশাল্লাহ। নব বর্ষের প্রথম পোস্টটি সবার প্রিয় এবং আমার ও প্রিয় বিভাগ, সাইকোলজিক্যাল টিপস দিয়ে শুরু করছি)
সারা বছর
ভালো থাকবেন ভালো রাখবেন
টিপস-২৫:
..................
সফল সুখী মানুষ প্রতি দিন যা করার চেষ্টা করে:
...............................................................
কাজের মা- বাবা হচ্ছে চিন্তা।
যে কোন অর্জন,সফলতা শুরু হয় কোন শুভ ভাবনা,পরিকল্পনা থেকে;
সমস্যার বিভিন্ন দিকের সঠিক সংযোগ বা অন্তর্গত বিষয়ে সঠিক পারম্পর্য (আইডিয়া, পারসপেকটিভ) থেকে ।
আজ আমরা তেমন কিছু ভাবনা,পরিকল্পনা ও কাজের কথা বলবো।
১। " যা অন্যরা করতে ইচ্ছুক নয়,আজ আমি তা করবো"(I will do what no one else is willing to do)
অন্যদের থেকে " ভিন্ন" হওয়ার সহজ পথ হচ্ছে অন্যরা যা করতে অস্বীকার করে, তেমন কাজ করা।
তাই তেমন একটি কাজ হাতে নিন।
এটি যে কোন সহজ কাজ হতে পারে।তাতে কিছু যায় আসে না।এটি যা-ই হোক সেটি করুন।
আপনি তাৎক্ষনিক ভাবে ঐ " ভীড়" থেকে আলাদা হয়ে উঠবেন।
এরপর আরো এগিয়ে যান।প্রতিদিন অন্যরা করে না তেমনন একটি কিছু করুন।
সপ্তাহ খানেক পর আপনি আনকমন হয়ে উঠবেন।
( মনে রাখবেন দশজনের ভীড় থেকে আলাদা হওয়া চাট্টি খানা কথা নয়।সবার সে সাহস বা দৃড়তা থাকে না।
এভাব নর্মাল মানে এবনর্মাল।কেউ এবনর্মাল হতে সাহস পায় না।
কিন্তু সব সৃজনশীল, মহৎ মানুষ ই এভাব এভারেজ পারসন।)
মাস খানেক পর আপনি "স্পেশাল" হয়ে উঠবেন।
আর বছর খানেক পর আপনি হবেন " অবিশ্বাস্য " বা " বিস্ময়কর" ( incredible) ।
২। " আমি ভয়কে মোকাবিলা করবো"(I will face fear) :
............................................
অজানাকে ভয় পাওয়া কমন ব্যাপার।
তবে মনে রাখবেন পৃথিবীতে কোন কিছুই তেমন কঠিন বা ঘাবড়ানোর বিষয় নয়।
বরং কোন ভয় কাটিয়ে উঠার মাঝে রয়েছে অবিশ্বাস্য রকমের উত্তেজনা।
" আমি বিশ্বাস করতে পারছি না যে আমি এ রকমটি করতে পেরেছি" -
এ রকম বোধ আপনার মনে আনন্দ- গৌরবের শিহরন তুলবে।যেমনটি হয়ত বহু দিন আপনি অনুভব করেননি।
প্রতিদিন তেমন ভয় পাওয়া বা ঘাবড়ানো জাতীয় কিছু করুন - তা শারিরীক বা আবেগগত ভয়, যাই হোক না কেন।
বিশ্বাস করুন, এর ফলে যে কোন সমস্যা আসলে সেটি গভীর চিন্তা সহকারে সমাধান নির্নয়ের পথ খুজে পাবেন।
৩। " আজ আমি সব করতে পারবো না, তবে আমি একটি ক্ষুদ্র পদক্ষেপ নিতে পারি"(I can't do everything today, but I can take one small step):
..........................................................
আপনার রয়েছে কত পরিকল্পনা,কত লক্ষ্য, কত আইডিয়া।
কিন্তু কে এ সবকে কেয়ার করে?
যে পর্যন্ত বাস্তবে কিছু করছেন,ততক্ষন এগুলো কিছুই না।
প্রতিদিনই ইতস্তত ভাব,অনিশ্চয়তার ভয় আমাদের আইডিয়া,পরিকল্পনাকে কাজে রুপান্তর করতে বাধার সৃষ্টি করে।
তাই " শুরু" করুন।
অল্প করে যাত্রা শুরু করুন।
মনে রাখবেন যে কোন কাজের শুরুটা হচ্ছে সব চেয়ে কঠিন কাজ।
পরবর্তী ধাপগুলো সহজ।
তাই " শুরু" করুন যে ভাবেই হোক।
৪। " সঠিক ভাবে মূল্যায়িত নয়,প্রশংসিত নয়,এমন কাউকে মূল্যায়ন করবো,প্রশংসা করবো"(I will appreciate someone unappreciated):
......................................................
কিছু কাজ রয়েছে যেখানে দক্ষতা নয়, প্রচেস্টা বেশী প্রয়োজন।
প্যাকেজ ডেলিভারী করা, মালামাল বাধা তেমন কাজ।
এখানে দক্ষতার চেয়ে চেস্টার বেশী দরকার।
তাই যারা থ্যাংকলেস জব করছেন, তাদের শুধু শুষ্ক ধন্যবাদ না দিয়ে আরো বেশী কিছু করুন।
হাসুন,তাদের চোখে চোখ রাখুন,প্রীতিময় ভাষায় কথা বলুন।
এ ছাড়াও এ সমাজে প্রকৃত যোগ্য, সৎ, মেধাবী অনেক মানুষ রয়েছে যারা সঠিক ভাবে মূল্যায়িত হন না, প্রশংসা পান না।
বরং অবজ্ঞা,তিরস্কার পেয়ে থাকেন।
আসুন তাদের সঠিক মূল্যায়ন করি,স্বীকৃতি দেই।
আমাদের চারপাশে অনেকে রয়েছে যারা নিরন্তর পরিশ্রম করে যাচ্ছেন, কিন্তু যথাযথ স্বীকৃতি পাচ্ছেন না।
সবচেয়ে ভালো উদাহরন আমাদের নিজ ঘরেই।
নারীরা যে শ্রম,যত্ন,ভালোবাসা দিয়ে সংসারকে আগলে রাখে তাদের সে শ্রম, কাজের কতটুকু স্বীকৃতি বা মূল্যায়ন তারা পায়?
মনে রাখবেন এ রকম শ্রদ্ধা দেখাতে পারলে আপনিও হয়ে উঠবেন সর্বজন শ্রদ্ধেয়।
৪। " যত বলবো তার চেয়ে ১০ গুন বেশী শুনবো"(I will listen 10 times more than I speak):
...............................................
অনেক বেশী কথা বলে ভাববেন না আপনি চালাক ও বুদ্ধিমান।
মনে রাখবেন প্রকৃত আত্ম বিশ্বাসী লোক কথা বলার তেমন প্রয়োজন বোধ করে না।
কখনোই নিজকে খুশী করার জন্য কথা বলবেন না।
এবং তেমন ক্ষেত্রে আপনি অন্যকেও খুশী করতে পারবেন না।
৬। " অন্যরা কি ভাববে সেটি আমি কেয়ার করি না":
..............................................................
বেশীরভাগ সময় আমরা এ ভাবনায় পীড়িত থাকি, অন্যরা আমাকে নিয়ে কি ভাবে,কেমন ভাবে।
কিন্তু মর্যাদাপূর্ন,শান্তিপূর্ন জীবন যাপন করতে চাইলে এ রকম হীনমন্যতা, ক্ষতিকর চিন্তা পরিহার করতে হবে।
আমরা অন্যদের প্রশংসা,স্বীকৃতি,অনুমতির যত মুখাপেক্ষী থাকবো, তত তাদের গোলাম হয়ে থাকতে হবে।
কে আপনাকে নিয়ে কি ভাবে বা ভাববে, তাকে থোরাই কেয়ার করুন।
তারা কি আপনাকে নিয়ে ভাবে?
তাহলে কেন তাদের মতামত,মন্তব্য, পছন্দকে আপনি এত গুরুত্ব দিবেন?
অন্যরা মন্দ ভাববে, অথচ আপনি মনে করেন সঠিক, তেমন একটি কাজ প্রতিদিন করুন।
সাহসের সহিত,প্রত্যয়ের সহিত তা করুন।
তাদের থোতা মুখ ভোতা করতে তা করুন।
তাদের উপেক্ষা,অবজ্ঞা দেখাতে হলেও করুন।
নিজের আত্ম মর্যাদাবোধ উচু রাখতে, নিজকে সম্মানিত করতে তেমনটি করুন।
এটি আপনার জীবন -- আপনার মতন জীবন যাপন করুন
৭। " পারফেক্ট না হলে ও আমার চলবে"( I will be OK with less perfect):
.....................................................
আমাদের প্রত্যাশা হচ্ছে পারফেক্ট হওয়া।
কিন্তু দূর্ভাগ্যজনক হলে ও এটি সত্য যে, পৃথিবীতে কোন কিছুই পারফেক্ট নয়।
বরং পারফেকশন চাওয়াটি হচ্ছে আমাদের সব চেয়ে বড় শত্রু।
কঠোর পরিশ্রম করুন,বড় বড় কাজ করুন,আপনার সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করুন।
এরপর যা হবে তা স্রষ্টার হাতে ছেড়ে দিন।
তবে অনেক কিছুতে আমাদের উন্নতি করতে হবে বিশেষ করে সম্পর্ক বিষয়গুলোতে।
কিন্তু তাই বলে সব ব্যাপারে আপনি পারফেক্ট হতে পারবেন না।
এ সব বিষয় "ছেড়ে দিন"(let go)।
নিজের যে কেন ঘাটতি,অক্ষমতা কাটিয়ে উঠতে সর্বোচ্চ চেষ্টা নিবেন, তারপর "ছেড়ে দিবেন "
৮। " আরো ভালো করার চেষ্টা করবো "(I will try to do better):
........................................................
উপরে কিছু ক্ষেত্রে ছেড়ে দেওয়ার কথা বলেছি।
তবে অনেক ক্ষেত্রেই আমাদের ভালো করার অনেক সুযোগ থাকে।
কি কাজ করতে হবে ও কি কাজ থেকে বিরত থাকতে হবে-- এটি জানা জরুরী।
গতকালের কথা ভাবুন, কি কি ভালো হয়েছে।
তারপর ভাবুন কি কি ভালো হয়নি বা যা কিছু ভালো হতে পারতো।
এরপর সব দায়িত্ব নিজের উপর নিন এবং প্রতিজ্ঞা করুন আগামীতে আরো ভালো করবেন।
৯। " একটি জিনিস আমি সব সময় করতে পারি,তা হচ্ছে তাদের চেয়ে অধিক কাজ করা":
..................................................
আপনি হয়তো তেমন অভিজ্ঞ নন,তেমন অর্থ কড়ি নেই বা তেমন মেধা সম্পন্ন নন।
কিন্তু আপনি সব সময় অন্যদের চেয়ে ভালো চিন্তা করতে পারেন,ভালো কাজ করতে পারেন।
সবাই অতিরিক্ত পথ হাটতে চেষ্টা করে( extra miles)।
কিন্তু কম লোকই সেখানে যায় বা পৌছতে পারে।
এমনকি সব কিছু আপনার বিরুদ্ধে রয়েছে মনে হলে ও, তখন ও "চেষ্টা " এবং "লেগে থাকা" আপনার প্রতিযোগীতার জন্য সহায়ক শক্তি।
এই সহায়ক শক্তিকে সর্বোচ্চ ব্যবহার করুন।
১০। " আমি থেমে যাবো ও আমার গোলাপের সুগন্ধ নেবো"(I will stop and smell my roses):
...................................................
আপনার রয়েছে বড় বড় পরিকল্পনা ও বড় বড় লক্ষ্য।
এবং আপনি কখনো পরিতৃপ্ত নন।
দূর্ভাগ্যজনক হলে ও সত্যি আমরা বেশীরভাগ সময় অসুখী থাকি।
কারন আমরা কি অর্জন হয়নি,কি কি করতে পারিনি ও কি কি আমাদেের নেই, সে সব ভেবে অসুখী হয়ে পড়ি।
বরং উচিত হচ্ছে তেমন কিছু বেশী করা, যা আমাদেরকে সুখী করবে।
একটু ভেবে দেখুন পেশাগত জীবনে বা ব্যক্তিগত জীবনে আপনার কি কি রয়েছে।
এ মুহুর্তেই আপনার এমন অনেক কিছু রয়েছে যা আপনি
এক সময় স্বপ্নেও সম্ভব মনে করেননি।
বিশেষ করে আপনার সম্পর্কগুলোর দিকে তাকান।
আপনার পরিবার,আত্মীয়,বন্ধুগনের দিকে।
এটি ঠিক , আপনি আরো অধিক কিছুর জন্য প্রচেষ্টা নেবেন।
কিন্তু একটু সময় নিয়ে ভেবে দেখুন, যা কিছু আপনার রয়েছে সে গুলো ও অনেক গুরুত্বপূর্ন।
আপনার যা রয়েছে তা কোন আশা নয়,স্বপ্ন নয়,ইচ্ছে ও নয়।
এগুলো নিরেট বাস্তবতা এবং এটি দারুন ও ভীষন ব্যাপার(awesome)।
এবং এটি একান্ত আপনার
একে উপভোগ করুন,একে মূল্যায়ন করুন
No comments:
Post a Comment