Friday, April 28, 2017

নবাগতরা যেভাবে মেডিটেশন করবেন

পর্ব-৩:মেডিটেশন এক ধরনের সাধনা/তপস্যা

আধ্যত্বিক সাধকরা নির্জনে স্রস্টার সাক্ষাত লাভের জন্য ও নিজের  পূর্ন  সত্বার বিকাশের জন্য,নিজ ও স্রস্টার সঙ্গে কানেক্টেড হওয়ার জন্য বছরের পর বছর ব্যাপী ধ্যান/ সাধনা করতেন( গৌতম বুদ্ধ,নিজামউদ্দীন আউলিয়া)।  তবে আমরা সাধারন মানুষ খুব সীমিত লক্ষ্য নিয়ে,স্বল্প সময় নিয়ে মেডিটেশন  চর্চা করি অশান্ত,অস্হির মনকে কিছুটা  "শান্ত,সুস্হির" রাখতে।এ  চর্চায় ফল পেতে হলে একে সাধনা/ তপস্যা হিসেবে নিতে হবে।কেননা প্রকৃত মেডিটেশন  কোন সহজ সাধ্য কাজ নয়।

কেউ কেউ জানতে চেয়েছেন মেডিটেশন কি ও এর উপকারিতা কি?
মন হচ্ছে অসীম শক্তির আধার।এ মন নেতিবাচকভাবে কাজ করে জীবন দূর্বিষহ করে তুলতে পারে, আবার হিটলার,ট্রাম্প, কিম এর মতন অসুস্হ মানসিকতার নেতা পৃথিবীতে মহা প্রলয় আনতে পারে।অন্য দিকে মনকে নিয়ন্ত্রনে রাখার কৌশল জানা থাকলে ইতিবাচক ও সৃজনশীল মনের অসীম শক্তিকে কাজে লাগিয়ে জীবনকে সুখী সফল যেমন করতে পারি, আব্রাহাম লিঙ্কন,মহাত্মা গান্ধির মতন নেতার মাধ্যমে পৃথিবীর চালচিত্র ও বদলে যেতে পারে।মনের ৩ স্তর: সচেতন মন,অবচেতন মন ও অচেতন মন।অবচেতন ও অচেতন মন আমাদের জানাশোনার বাইরে যেমন, তেমনি এগুলো আমাদের আপাত নিয়ন্ত্রণের বাইরে।আমাদের চিন্তার প্রায় ৭০-৮৫% নেতিবাচক চিন্তা,দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে পূর্ন থাকে। মেডিটেশন এর মাধ্যমে মনের উপর নিয়ন্ত্রণ এনে আমরা অবচেতন,অচেতন মনের বিশাল শক্তিকে আমাদের কল্যানের কাজে,আমাদের সফলতার কাজে লাগাতে পারি।অবচেতন মন ভালো- মন্দ যাচাই করে না, হুকুমের দাস হিসেবে যে সাজেশন বা তথ্য দেওয়া হয় পরিনতি না ভেবে, অন্ধের মতন সে অনুযায়ী কাজ করে।তাই আপনি মেডিটেশন এর মাধ্যমে অবচেতন মনকে পরিচ্ছন্ন করতে পারেন,নেতিবাচক চিন্তা দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তে ইতিবাচক চিন্তায় মনকে পুষ্ট রাখতে পারেন এবং ইতিবাচক সাজেশন দিয়ে অসাধ্য সাধন করতে পারেন।
এভাবে মনের অসীম শক্তিকে গঠনমূলক,সৃজনশীল ও কল্যানকর কাজে লাগিয়ে নিজের জীবন ও পৃথিবীর চালচিত্র ইতিবাচক ভাবে বদলে দিতে পারবেন।আমরা যে আধ্মাতিক সাধনার উচ্চ মার্গ বলি সেটি মূলত অচেতন মনকে জানা ও এর সঙ্গে পূর্নভাবে কানেক্ট করতে পারাকে বুঝায়। নিজকে জানা(knowthyself)  বলতে এটিকেই বোঝানো হয়।নিজের গভীরতম সত্বাকে জানা মানে অবচেতন ও অচেতন মনের রহস্য উদঘাটন করতে পারা।।মেডিটেশন এর গভীর স্তরে কোন কোন সাধক   সে পর্যায়ে যেতে পারে।তবে আপনার আমার জন্য এতো উচ্চ লক্ষ্য নির্ধারন না করলেও চলবে।মনকে স্হির,প্রশান্ত  করার অবস্হায় পৌছতে পারলে,অবচেতন মনকে ইতিবাচক " সাজেশন" দিয়ে,  কাঙ্খিত " মেন্টাল ইমেজ"(visualization) তৈরী করতে পারলে মনে করবেন আপনি মেডিটেশন এ সফল।তখন  যাদুর চাবি আপনার করায়ত্ব হবে ও যে কোন অবিশ্বাস্য সফলতা আপনার হাতের মুঠোয় চলে আসবে।
মেডিটেশন এর  পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা করছিলাম।
আজকে ২য় পদ্ধতি বা সচরাচর করা পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা :
শ্বাস-প্রশ্বাসের দিকে মনোযোগ দিয়ে মেডিটেশন:

নির্দিষ্ট পজিশন( আগে আলাপ করেছি- যেটি আপনার জন্য  আরামদায়ক)  নিন।হাল্কাভাবে চোখ বন্ধ করুন।নাক দিয়ে লম্বা শ্বাস নিন ও মুখ দিয়ে ছাড়ুন( বিস্তারিত  ১ম পর্ব- দেখুন)।শ্বাস নেওয়ার সময় পেটের উপরিভাগ  যেন ফুলে উঠে ও ছাড়ার সময় পেটের উপরিভাগ চুপসে যাবে।এবার পা থেকে মাথা পর্যন্ত বা উল্টো মাথা থেকে পা পর্যন্ত বিভিন্ন অংশে কিছুক্ষণের জন্য  মনোযোগ দিন।যেমন যদি মাথার তালু থেকে শুরু করেন মনোযোগ সেখানে দিন।১০-১৫ সেকেন্ড মনোযোগ দিন।কেমন অনুভব করছেন তা টের পেতে চেষ্টা করুন(টান টান,গরম,জ্বালা,ঠান্ডা বা অন্য কোন অনুভূতি?)। তালুর পেশীগুলো হাল্কা করে "ছেড়ে দিন"(let go)। যেন মাংসপেশী ঝুলে পড়েছে,হাল্কা হয়,নরম হয়ে পরে রয়েছে।আপনি স্বস্তি অনুভব করবেন, টান টান থেকে মাংস পেশী শিথিল হবে।(PMR- progressive muscle relaxation পদ্ধতি  হলে একবার মাংসপেশি শক্ত করবেন, যত জোরে সম্ভব শক্ত করতে হবে ও এতে মাংসপেশির উপর যে "চাপ"(tension) পরবে তা অনুভব করুন।পরক্ষনেই পুরো পেশী ছেড়ে দিন,শিথিল করুন।পূর্বেকার টেন্সড অবস্হার চেয়ে এখনকার শিথিল অবস্হার ফলে যে আরাম,স্বস্তি পাচ্ছেন তা ভালোভাবে অনুভব করুন।টেনশন থেকে মুক্তি মানে এরকম টানটান অবস্হা থেকে শিথিল( রিলাক্সড) অবস্হায় আসা)। তবে পিএমআর না,আমরা সাধারন পদ্ধতি ব্যবহার করবো।
এরপর কপাল,চোখ,চোখের পাতা,ঠোট,চোয়াল, থুটনি,গলা,ঘাড়,কাধ,ডানহাত,বামহাত,বুক,পিঠ,পেট,নিতম্ব,কোমর, উরু,হাটু,পা,গোড়ালী,পায়ের পাতা - প্রতিটি অঙ্গে এক এক করে মন ফোকাস করবেন ও উপরোক্ত নিয়মে তা শিথিল করবেন।শিথিল হলে যে আরাম,স্বস্তি তা মন- প্রান দিয়ে অনুভব করবেন। এ রকম কয়েক বার করুন।এরপর মাথা থেকে পা পর্যন্ত উপরে বর্নিত সবগুলো অঙ্গ  দ্রত মনের চোখ বুলিয়ে যান।এবার মাংসপেশি শিথিল করবেন দ্রত।পরে মাথা থেকে পা পর্যন্ত পুরো শরীর একবারেই "শিথিল হও" বা " শান্তি,শান্তি"( আল্লাহ,আল্লাহ বা ভগবান,ভগবান) বলে মূহুর্তের মধ্যে শিথিল করার কমান্ড দেবেন,যাতে তাৎক্ষনিকভাবে রিলাক্সড হতে পারেন। ভালোভাবে প্রাকটিস হলে বৃদ্ধ আঙ্গুল ও তর্জনী একত্র করে শুধু " রিলাক্সড হও" কমান্ড দিলেই পুরো শরীর- মন মুহূর্তে রিলাক্সড হয়ে যাবে।তখন যখন-তখন,যেখানেসেখানে  মুহূর্তের মধ্যে রিলাক্সজেশন  ও মেডিটেশন করে ফেলা সম্ভব হবে।
রিলাক্সড হওয়ার পর( বা সরাসরি)  মনোযোগ শ্বাস- প্রশ্বাসের দিকে নিবদ্ধ করুন।শত শত চিন্তার জট মনে বুদবুদের মতন আসবে যাবে।সেগুলোর সঙ্গে জড়িয়ে যাবেন না।যদি জড়িয়ে যান হতাশ বা বিরক্ত হবেন না।কোনরকম যুদ্ধ করবেন না,স্রেফ  হাল্কা করে মনোযোগ পুনরায় শ্বাস প্রশ্বাসের দিকে নিন।এভাবে ১৫ মিনিট বা তার চেয়ে বেশীক্ষণ মেডিটেশন চালিয়ে যান।
এভাবে শরীর-মন পূর্ন রিলাক্সড করতে সক্ষম হলে মনে প্রশান্তি আসবে।তখন অবচেতন মনকে প্রয়োজনীয় "ইতিবাচক সাজেশন" দেওয়া ও যা  এবং  যেরকম হতে চান সেরূপ " মেন্টাল ইমেজ"(visualization) তৈরী করার প্রাকটিস করতে পারবেন( অন্য সময় সাজেশন ও মন ছবি তৈরী নিয়ে আলোচনার ইচ্ছে রাখি)।
আমি স্হানাভাবে খুবই সংক্ষিপ্ত ভাবে পুরো প্রক্রিয়াটি কিভাবে করবেন তা বললাম।তবে আপনাকে এই প্রতিটি ধাপ ধৈর্য্য ধরে অনেকদিন করে যেতে হবে যাতে কৌশলটি আপনার পূর্ন আয়ত্বে আসে।একটি ধাপের উপর নিয়ন্ত্রণ না আসা পর্যন্ত প্রাকটিস চালিয়ে যেতে হবে এবং এর পরই পরবর্তী ধাপের চর্চা শুরু করবেন।

Wednesday, April 26, 2017

সাইকিয়াট্রিস্ট এর জার্নাল-৯: নবাগতরা যে ভাবে মেডিটেশন করবেন

পর্ব-২:
৭। প্রতিজ্ঞা বদ্ধ হন: ওজন কমাতে যারা হাটেন,ব্যায়াম করেন তারা কি রাতারাতি কাঙ্খিত ফল পান? মেডিটেশন এ ও ফল পেতে সময় লাগবে।তাই রাগ করে,বিরক্ত হয়ে চেষ্টা বাদ দিবেন না।বরং প্রতিজ্ঞা বদ্ধ হন যে নিয়মিত প্রাকটিস করবেন।
৮। শ্লথগতিতে অগ্রসর হন: আমরা যেমন প্রথমে ১৫ মিনিট,পরে ৩০ মিনিট এভাবে হাটার সময় বাড়াই,মেডিটেশন এ ও তেমনি প্রথমে স্বল্প সময় দিয়ে শুরু করুন।যখন আয়ত্বে আসবে ও স্বস্তি অনুভব করতে শুরু করবেন তখন ক্রমশ সময় বাড়িয়ে নেবেন।
৯। মেডিটেশন এর উপর বই পড়ুন ও  গাইডেড সিডি কিনুন।
১০। বিভিন্ন "পজিশন" পরীক্ষা করে দেখুন কোনটি আপনার জন্য আরামদায়ক:
ইয়োগাতে সাধারনত " পদ্মাসন" করা হয়।আপনি পদ্মাসন করতে পারেন,পায়ের উপর পা তুলে দিয়ে এক পা এর পাতা অন্য পা এর রানে রাখতে পারেন ; চেয়ারে বসতে পারেন,দু'হাত জোড় করে প্রার্থনার মতন করে মুখের সামনে রাখতে পারেন,শুয়ে করতে পারেন।এক কথায় যেভাবে খুশী করতে পারেন।যখন মেডিটেশন আয়ত্বে চলে আসবে নিজেই বুঝবেন কোন পজিশন আপনার জন্য আরামদায়ক।
১১। মেডিটেশন এর বিভিন্ন পদ্ধতি :
মেডিটেশন এর কোন সঠিক বা বেঠিক পদ্ধতি নেই।যেটি আপনার জন্য কার্যকর সেটিই আপনার জন্য সঠিক পদ্ধতি। মন থেকে সব চিন্তা দূর করে মনকে " স্বচ্চ,পরিচ্ছন্ন " রাখা সহজ কোন কাজ নয়।অতিন্দ্রিয় কোন সত্মার সঙ্গে যোগাযোগ হবে এমন অতি আশাবাদ না থাকা ভালো।তবে এক সময় হয়তো আপনি এমন স্তরে পৌছতে পারবেন যে আপনি নিজের উচ্চতর সত্বার সঙ্গে নিজকে কানেক্ট করতে  পারবেন।তবে নবাগতদের এতো প্রত্যশা না থাকা ভালো।বার বার চিন্তার জট এমন ভাবে আপনাকে জড়িয়ে ফেলবে যে আপনি  ভাবেন মনকে তো কিছুতেই পরিস্কার রাখতে পারছি না,চিন্তা জালে বার বার আটকে যাচ্ছি, আমি বোধ হয় পারবো না।তাই প্রত্যশা কমিয়ে স্রেফ প্রাকটিস করে যান।মেডিটেশন এর বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে ট্রাই করে দেখুন কোনটি আপনার জন্য সুবিধেজনক।কয়েকটি পদ্ধতির বিবরন দিচ্ছি :

১। সঙ্গীতের মূর্ছনায় মেডিটেশন :binaural beats):এখানে দূটি ভিন্ন ধরনের সাউন্ড একত্রিত হয়ে সম্মোহনী সুর তৈরী করে। এটি অনেকের কাছে আনন্দদায়ক ও সহজ মনে হবে।এগুলো nice chill music।শুয়ে থাকুন ও সুরেলা মিউজিকের সম্মোহনী আবেশে মন্ত্রমুগ্ধ হয়ে যাবেন। এখানে এমন সুর তৈরী করা হয় যা কেবল মন- মস্তিষ্ক  শুনতে পারে।ফলে মন হয় প্রশান্ত, শিথিল ও ধ্যানমগ্ন।বলা হয় অন্য মেডিটেশন  এক ঘন্টা করার চেয়ে এখানে ১২ মিনিটে সে ফল পাবেন। যদি অন্য প্রকার মেডিটেশন এ মনকে সহজে বশে আনতে না পারেন, সহজে মনকে শান্ত করতে না পারেন, ( যেমন আমি) তাহলে এ মেডিটেশন আপনার জন্য  উপযুক্ত। এটি নিয়মিত চর্চা করলে আপনি শীঘ্র উচ্চতর স্তরে যেতে পারবেন।গবেষনায় দেখা গেছে এই " বিটস"  মনকে স্বচ্চ করতে,(clarity) , এলোমেলো চিন্তা থেকে লক্ষাভিমুখী চিন্তায় মনোযোগ দিতে,প্রান শক্তি বাড়াতে,সৃজনশীলতাকে বৃদ্ধি করতে এবং আরো অনেক ইতিবাচক পরিবর্তন আনতে সাহায্য করে।।যা আপনার মনে স্বস্তি, শান্তি ও সুখ আনবে।বলা হয় মাদক যে পর্যায়ের আনন্দ, প্রশান্তি দেয়,এ মেডিটেশন এ আপনি তেমন প্রশান্তি, আনন্দ পাবেন।এ জন্য একে " digital drugs" বলা হয়।কিছু বিটস কিনতে হয়, কিছু ইউটিউবে ফ্রি পাওয়া যায়।( আমি একটি এখানে পোস্ট করলাম)
( চলবে)

Monday, April 24, 2017

সাইকিয়াট্রিস্ট এর জার্নাল-৯: নবাগতরা যে ভাবে মেডিটেশন করবেন

পর্ব -১:

জীবনকে আরো প্রশান্তিময় করতে, আরো কম চাপযুক্ত রাখতে মেডিটেশন এর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। কখনো কখনো জীবনের ভার এতো বেশী হতে পারে যে আমরা ভেঙ্গে পরতে পড়ি,মুছড়ে পরতে পারি।( চাকরির চাপ,সংসারে স্বামী / স্ত্রী বা  পরিবারের অন্য সদস্যদের প্রত্যাশা পূরনের চাপ,পরিক্ষা সহ নানাবিধ মানসিক চাপ)। বর্তমান পরিস্হিতি যত চাপজনক বা হতাশাজনক হোক মেডিটেশন আমাদেরকে আমাদের ভিতরের সারবত্তার সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিয়ে মনকে প্রশান্ত ও চিত্তকে চাপমুক্ত রাখে।কিন্তু মেডিটেশন করতে গিয়ে আমরা অনেকেই হতাশ হই,চিন্তামুক্ত হতে পারি না বলে ও কাঙ্খিত ফল পাই না বলে।এ জন্য নবাগতদের জন্য কিছু টিপস দিচ্ছি :

১। প্রতিদিনই মেডিটেশন করার " সময়" বের করে নিতে হবে:
মনে রাখবেন- প্রাকটিস মেকস আস পারফেক্ট। যারা নবাগত মনে রাখবেন একবার এটি শুরু করলে এটি অব্যাহত রাখা গুরুত্বপূর্ণ। তাৎক্ষনিক বেনিফিট হয়তো পাবেন না,কিন্তু যত প্রাকটিস করবেন ততই দেখবেন আপনার মন ক্রমশ " শান্ত" হয়ে আসছে।এমনকি প্রতিদিন অন্তত ৫ মিনিট হলেও মেডিটেশন চর্চা অব্যাহত রাখতে হবে।( ৫-১০ মিনিট সময় বের করতে না পারলে বুঝবেন আপনার বড় সমস্যা রয়েছে- যা দ্রত সমাধান করতে হবে)।
২। শুরু করবেন শ্বাস- প্রশ্বাস এর ব্যায়াম দিয়ে:

মনোযোগ নিবদ্ধ রাখবেন শ্বাস প্রশ্বাস এর দিকে।গভীরভাবে শ্বাস নিতে ও ছাড়তে হবে।( বুক থেকে নয়,পেট থেকে হতে হবে)। ধীরে ধীরে যত বেশীক্ষণ সম্ভব শ্বাস নেবেন।এর পর ততটুকু সময় শ্বাস ধরে রাখবেন।পরে তার চেয়েও বেশী সময় ধরে শ্বাস ফেলবেন,যেন ফুসফুস থেকে বায়ুর শেষ অংশটুকু ও বের হয়ে যায়।শ্বাস নেবার সময় ভাবুন বিশুদ্ধ বায়ুর সঙ্গে  বিশ্বের  সকল মঙ্গল ও কল্যাণকর জিনিস আপনার শরীর- মনে প্রবেশ করছে।আবার শ্বাস ফেলার সময় ভাবুন শরীর- মন থেকে সকল দূষিত,বিষাক্ত,অকল্যাণকর জিনিস বের হয়ে যাচ্ছে।
৩। চিন্তাকে " বয়ে " যেতে দিন:
মেডিটেশনে হতাশা আসে কেননা আমরা চাই মন চিন্তামুক্ত থাকুক।তাই চিন্তাকে বাধা দিতে, দূর করে দিতে " চেষ্টা" চালিয়ে যাই।কিন্তু যা করতে হবে তা হচ্ছে চিন্তাগুলো স্রেফ বয়ে যেতে দিন।চোখ বন্ধ করলেই দুনিয়ার হাবিজাবি চিন্তার বন্যা মনে বয়ে যাবে।এগুলোকে তাড়িয়ে  দেওয়ার চেষ্টা যেমন করবেন না আবার  এগুলোর সঙ্গে লেগে ও থাকবেন না।মনকে চিন্তাগুলো থেকে " বিযুক্ত" রাখুন।শুধু দর্শকের মতন দেখুন চিন্তার ট্রেন কিভাবে  আসছে ও যাচ্ছে। চিন্তা ও আপনি এক নন।চিন্তা স্রোত আপনাকে ভাসিয়ে নিতে চাইবে, আপনি নিছক হাল্কাভাবে নিজকে মুক্ত করে শ্বাস প্রশ্বাস এর দিকে পুনরায় মনোযোগ ফিরিয়ে আনুন।
৪। একটি নির্দিষ্ট  কক্ষ বেছে নিন: বাসার এমন একটি কক্ষ বেছে নিন যেখানে বাহির থেকে বেশী শব্দ না আসতে পারে।
৫। স্হানটি যেন প্রশান্তময় হয়: ডিম লাইট ব্যবহার করুন বা যেন কোন লাইটই না থাকে।কয়েকটি মোমবাতি জ্বালিয়ে রাখুন।ধূপ জ্বালাতে পারেন বা অন্য কোন সুগন্ধি তেল
৬। নিশ্চিত করুন যেন বাহির থেকে কেউ মনোযোগে বাধা সৃষ্টি করতে না পারে:
পরিবারের লোক,বন্ধু বা অন্যদের জানিয়ে রাখুন একটি " নির্দিষ্ট সময়" আপনি ব্যস্ত থাকবেন।নিজের ফোনটি ও সাইলেন্ট করে রাখুন।

Monday, April 17, 2017

যাহা বলিব সত্য বলিব-৫

৭ খুনের আসামী বলেন আল্লাহর কথা শুনে আজ আমার এ অবস্হা( নাউজুবিল্লা - ধর্মীয় অপব্যাখার করুন পরিনতি):
( প্রতি রবিবার রাত ১১-২০ মিনিটে এবিসি রেডিওতে প্রচারিত জনপ্রিয় অনুষ্ঠান "যাহা বলিব সত্য বলিব" তে  বর্নিত  অপরাধ জীবনের সত্য কাহিনী অবলম্বনে)
কাহিনী সংক্ষেপ :
পলাশ,বর্তমান বয়স ৩৪।  মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে।বাবা খুব রাগী মানুষ ছিলেন।প্রায়ই মারধর করতো। ১০-১১ বছর বয়সে তাদেরই এক ক্লাশমেট মেয়ের প্রেমে পড়ে তারা দু'বন্ধু।ঐ বন্ধুর রোল ছিল-১, তার রোল ছিল-২ ও ঐ মেয়ের রোল নং ছিল -৩। একদিন জুম্মার নামাজ শেষে তার ঐ বন্ধু বলে দোস্ত তোর কাছে একটি জিনিস চাইবো,দিবি? সে বলে হা দেবো।বন্ধু বলে এমনি বললে হবে না কসম খেতে হবে।পলাশ বলে কসম।বন্ধু বলে তাহলে কোরআন ছুয়ে বল।মসজিদ থেকে কোরআন এনে শপথ করায় বন্ধু যা চাইবে সে তা দিবে।

তখন বন্ধু বলে তুই আর বাড়ি ফিরে যাবি না,অন্যত্র চলে যা,তুই থাকলে ঐ মেয়েকে আমি পাবো না।পলাশ দ্বিধ্বায় পড়ে।কিন্তু কোরআন ছুয়ে কথা দিয়েছে সেটি বরখেলাপ করবে কিভাবে? তার মন বলে আল্লাহর কোরআন ছুয়ে শপথ ভাঙ্গলে চরম গুনাহ হবে।তাই সে তার সঙ্গে থাকা ৭-৮ টাকা সম্বল করেই ফরিদপুর থেকে ঢাকা চলে আসে।কমলাপুর এসে এক হোটেলের সামনে কাদতে থাকে।তখন হোটেলওয়ালা তাকে হোটেলে কাজ করতে  দেয়।তবে সেখানে তাকে প্রচুর মারধর ও নির্যাতন সহ্য করতে হয়।এক সময় সেখান থেকে ৫০০ টাকা চুরি করে সে পালিয়ে মিরপুরে চলে যায়।

মিরপুরে এক মাঠে বসে থাকা অবস্হায়  দুজন লোক তাকে ফুসলায় বোম মারতে পারবি? সে বলে আমি তো জানি না।তারা বলে শিখিয়ে দেবো।সে থেকে শুরু।

সে এক হরতালে বোমা মারে। পুলিশ তাকে দেখে ফেলে।কিন্তু সে দৌড়ে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয়।তার সাহস ও বুদ্ধি দেখে তার কদর বেড়ে যায়।ক্রমশ সে বোমা বানাতে শিখে,এরপর দেশীয় অস্ত্র বানাতেও শিখে এবং দুর্দান্ত কিলার হিসেবে নাম কুড়িয়ে ফেলে(?)।
চাদা না দিলে দিনে  দুপুরে খুন করতো।এ পর্যন্ত ৭ টি খুন করেছে বলে জানায়।
১ম খুন- গরুর ব্যাপারীর কাছ থেকে ৫ লাখ টাকা দাবী করে।অন্য আরেক গ্রপ ও সে সময় ঐ লোকের কাছে চাদা আনতে যায়।তখন পলাশ প্রতিপক্ষকে গুলি করে মেরে ফেলে।এটি নিয়ে তেমন কিছু হয়নি,কেননা তার গ্রপ ছিল অধিকতর শক্তিশালী। সে তখন কিছুদিন চিটাগাং এ গা ঢাকা দিয়ে থাকে।

এক সঙ্গে ৩ খুন- ম্যানেজারের কাছ  থেকে চাদা আনতে যায়।সে ৫ লাখ টাকা দাবী করে, ম্যানেজার বলে ৩ লাখ নিন।

এতে তার মেজাজ বিগড়ে যায়, আমাদের কথার উপর কথা।সে বলে ৬ লাখ দিবি।কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে সে গুলি করে। ঐ লোক মারা যায়।তখন আরো দুজন এগিয়ে আসলে তাদের ও গুলি করে মেরে ফেলো।
সে প্রায়ই ছদ্মবেশে অপারশনে যেতো।তার নাম ডাক বাড়ার সাথে সাথে সে গড ফাদার ও বদল করতো।রাজনীতির উচ্চ স্তর থেকে তাকে ব্যবহার করা হতো ও তাকে শেল্টার দেওয়া হতো।কিন্তু এক সময় পুলিশের হাতে ধরা পরে ও জেলে যেতে হয়।
অপরাধ জগতের অনেক খবর জানে বলে পুলিশ তাকে তাদের সোর্স হিসেবে নিয়োগ দেয়।পুলিশের সোর্স হিসেবে কাজ করার সময় এক " খারাপ" মেয়ের সঙ্গে পরিচয় হয়।সে মেয়েটিকে শুধু ভোগ করবে ভাবে।কিন্তু মেয়েটি তার পিছু লেগে থাকে।একসময় তারা বিয়ে করে।কিন্তু মেয়েটি তার খারাপ কাজ ছাড়ে না।তাই  সে   বউ নিয়ে দূরে  চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়,যাতে সেও অপরাধ জগত থেকে দূরে থাকে,তার বউ ও খারাপ কাজে যেতে  পারবে না।

দূরে গিয়ে তার অবৈধ  উপার্জন হারাতে হয়।সে এখন রিক্সা চালায়।একদিকে আর্থিক অসঙ্গতি অন্যদিকে পুলিশের চাপ, তাই সে এখন দিশেহারা।আবার পুরনো জগত থেকে বিভিন্ন " মিশনের" আহ্বান আসছে।একসময় টাকার অভাব ছিল না,চাইলে হাজার হাজার টাকা পেয়ে যেতো।এখন দু পয়সা দিয়েও কেউ সাহায্য করে না।তার মনে হয় তাহলে কি আবার ঐ অপরাধ জগতে ফিরে যাওয়াই সঠিক কাজ হবে?

তার বউ হযরত শাহজালালের মাজারে নিয়ে তাকে শপথ করায় যাতে সে তার বউকে ক খনো না ছাড়ে।সে শপথের কারনে খারাপ জেনেও বউ ছাড়েনি।তার ভাষ্য আল্লাহর কথা শুনতে গিয়ে আজ আমার এ অবস্হা।আমি এখন কি করবো?

সংক্ষিপ্ত পর্যবেক্ষণ :
১। কোরআন ছুয়ে শপথ: এটি আদৌ সঠিক কোন কাজ কিনা? ধর্মের মৌলিক জিনিস না জেনে ও না মেনে শুধু কোরআন এর শপথের নামে যা কিছু করা কতটুকু ইসলাম সম্মত? ধর্মীয় গোড়া বিশ্বাস ও প্রকৃত ধর্মীয় অনুশাসন পূর্ন ভাবে জীবনে ধারন করা এ দুয়ের মধ্যে যে বিশাল পার্থক্য রয়েছে তা আমরা কতটুকু শিখতে পেরেছি, শিখাতে পেরেছি?  জঙ্গীবাদীরা ও ইসলামের ও কোরআনের সামগ্রিক শিক্ষা গ্রহন না করে,খন্ডিত কিছু গোড়ামীর উপর দৃড় অন্ধ বিশ্বাসকে ধারন করে ইসলামের নামে পুরোপুরি ইসলাম বিরোধী নৃশংস কাজ করে যাচ্ছে।

নামাজ রোজার নাম নেই নিছক কোরআন এর শপথের নামে অনেক জগন্য কাজ আমাাদের সমাজে অহরহ ঘটছে।প্রকৃত আলেমদের তাই ইসলামের মূল ও পূর্নাঙ্গ ব্যাখ্যা সবার সামনে তুলে ধরতে হবে যাতে শুধু কোরআন শপথ করেছে বলে পলাশের মতন মারাত্মক ভুল কেউ না করে

২। মাজার শপথ: সেটি তো আরো নাজায়েজ কাজ।কিন্তু মাজার,পীর ভক্তদের সংখ্যা কি আদৌ কমছে? ইসলামের প্রকৃত শিক্ষা,বিজ্ঞানের আলো সবার মাঝে ছড়িয়ে না দিলে এ সব অপচর্চা কমার সম্ভাবনা কম

৩। রাজনৈতিক শক্তির শেল্টারে পলাশদের মতন ক্রিমিনাল তৈরী হয়।রাজনীতির শুদ্ধিকরন কবে আসবে? পুলিশ প্রশাসনে দুর্নীতি , অপরাজনীতি বন্ধ করতে না পারলে সমাজে অপরাধ নির্মূল করা কঠিন কাজ।বিড়ালের গলায় ঘন্টা বাধবে কে?

Saturday, April 15, 2017

সাইকলজিক্যাল টিপস-২৯: মানুষের শ্রেষ্ঠ সম্পদ তার আত্ম মর্যাদাবোধ

পর্ব-৩( শেষ পর্ব):
৬। আপনি কি  সর্বদা অন্যদের খুশী করতে নিজকে তাদের পা- পোষ হিসেবে ব্যবহ্রুত হতে দেন?(you constantly try to make others happy, essentially becoming their door- mate?)

আমরা যখন নিজেরা সুখে থাকি কেবল মাত্র তখনই অন্যদের সুখী করতে পারি।নিজেদের দিকে ফোকাস করে আমরা নিজেদের ভিতর সবচেয়ে বেশী পরিবর্তন আনতে পারি।মহাত্মা গান্ধী বলেছেন" যে পরিবর্তন পৃথিবীতে চাচ্ছেনন,সে পরিবর্তন আগে নিজের ভিতর আনুন"। কিন্তু যদি অন্যকে খুশী রাখতে গিয়ে নিজের স্বাধীন সত্বা বিকিয়ে দেন,তারা যেমন খুশী আপনাকে পায়ে মাড়িয়ে যেতে পারে,আপনি তাদের হাতের ক্রীড়নক হিসেবে কাজ করেন,তাহলে নিজকে বিকশিত করা,নিজের উত্তরন ঘটানো কি সম্ভব? সে ক্ষেত্রে আপনি কি সুখী হতে পারেন? নিজে সুখী না হলে তাদের সুখী করবেন কিভাবে? অথচ আপনি জান- প্রান দিয়ে চাচ্ছেন তাদের সুখী করতে,খুশী করতে।অন্যের পা-  পোষ হয়ে তাদের দাসত্ব করা যায়,নিজকে সম্মানিত বা শ্রদ্ধা করা যায় না।
৭। অন্যদের প্রয়োজন / চাহিদার নীচে নিজের চাহিদাকে চেপে রাখেন?
নিজের বিশ্রাম,আরাম ও যত্ন বাদ দিয়ে অন্যকে ফেবার করতে যাবেন না।আমরা যখন নিজের যত্ন ভালোভাবে নেই তখন আমরা ভালো ভাবে কাজ করতে পারি,অধিক উপার্জনক্ষম থাকি এবং আবেগগত ভাবে সুস্হির থাকি।তাই নিজের প্রয়োজন, চাহিদাকে অগ্রাধিকার দিন,নিজকে শ্রদ্ধার আসনে বসান।
৮।  আপনি কি বদ সঙ্গ ত্যাগ করতে পারছেন না?
আমরা নিজেদের প্রকৃত সত্বাকে বিকশিত করতে পারবো না যদি না যারা আমাদের সঙ্গ দেন তারা আমাদের সত্যিকার সত্বাকে উন্নত করতে সহায়তা না করেন।সময় নিন ও খুজে বের করুন " সম- মনা" লোকদের যারা আপনি যে রকম তেমনটি মেনে নেয় ও আপনাকে  সমর্থন  করেন( তবে সাময়িক সুবিধা নেওয়ার জন্য যারা তোষামোদি করে সেটিকে সৎ সঙ্গ মনে করবেন না)। অন্যদের ভালোবাসা ও সমর্থন না  পেলে নিজকে শ্রদ্ধা করা কঠিন।তাই তেমন উত্তম সঙ্গ বেছে নিন যারা আপনার গুনগ্রাহী,আপনার সত্যিকার সমর্থক।
৯। মিথ্যে "ভাবমূর্তি" তৈরীর অপচেষ্টা করবেন না:

মনে রাখবেন অন্যরা আমাদের বাস্তব সত্য সম্বন্ধে জানে এবং বিশেষ পরিস্হিতিতে কি ভূমিকা নেই তা ও জানে।তাই ভান করে,মেকি উচ্চ ভাবমূর্তি তৈরীর চেষ্টা নিজকে লজ্জায় ফেলবে,নিজের অবস্হান প্রশ্নবিদ্ধ হবে।কখনো ভুল থেকে শিখে নিয়ে বা ভুলকে সংশোধন করে নিজের একটি স্পস্ট, উজ্জ্বল ও প্রকৃত ভাবমূর্তি তৈরী করুন এবং নিজের সে ইমেজকে নিজে সম্মান করুন,পছন্দ করুন।এটি হচ্ছে প্রকৃত আত্ম শ্রদ্ধার লক্ষন।
মনে রাখবেন আমরা কেউ নিজকে অশ্রদ্ধা করতে চাই না।কিন্তু আমাদের কিছু স্বয়ংক্রিয় আচরন নিজকে অসম্মান, অশ্রদ্ধা করার পর্যায়ে নিয়ে যায়( ৩ পর্বে যেগুলো উল্লেখ করেছি)। একটু সচেতন হয়ে সেগুলো চিন্হিত করে ও সংশোধন করে আমরা আত্ম শ্রদ্ধা বাড়াতে পারি,যা অন্যদের কাছে আমাদের সম্মান, মর্যাদা বৃদ্ধি করবে।

Wednesday, April 12, 2017

সাইকোলজিক্যাল টিপস-২৯: মানুষের শ্রেষ্ঠ সম্পদ তার আত্ম মর্যাদাবোধ

পর্ব-২:
৩। আপনি সত্যিকার যেরকম অনুভব করছেন    নিয়মিত ভাবে সেগুলো লুকিয়ে রাখেন?
মানুষ মাত্রই আবেগ পূর্ন জীব।কিন্তু সমাজ আমাদের শিখিয়েছে এ সব লুকিয়ে রাখতে যাতে অন্যরা অস্বস্তিতে না পড়ে।সব কিছু ভালো যাচ্ছে না তথাপি প্রতিবার " চমৎকার আছি"(fine) বলা শুধু নিজকে ঠকানো নয়,নিজকে অশ্রদ্ধা করার সামিল।আমাকে দুংখিত দেখলে,বিধ্বস্ত দেখলে,উদ্বিগ্ন দেখলে অন্যদের কাছে ছোট হয়ে যাবো,তারা মজা পাবে,টিটকারি করবে ইত্যাদি ভাবনা মানে তাদের মতামত ও প্রতিক্রিয়াকে গুরুত্ব দেওয়া।আত্ম মর্যাদা সম্পন্ন মানুষ অন্যদের থোরাই কেয়ার করে,তা প্রশংসা করুক,বা তিরস্কার করুক বা উপহাস করুক।আপনি যা ও যেরকম তেমনটি প্রকাশ করুন,কারো লজ্জায় তা লুকিয়ে রাখবেন না।আপনি আপনার মতন হয়ে উঠুন।
৪। অন্যদের উপদেশ শুনেননি বলে নিজের জন্য সঠিক কাজ করার পর অপরাধ / গ্লানিতে ভুগেন?
আমাদের  জীবনে গুরুজন, বিজ্ঞজনের পরামর্শের প্রয়োজন রয়েছে।তবে উপদেশ যদি সঠিক মনে না হয় বা অন্যের মতামত যদি নিজের জন্য সঠিক বিবেচনা না করেন, সে  ক্ষেত্রে নিজের  মতন কাজ করে অপরাধে ভুগবেন না।তারা নাকোচ হবে,তারা ক্ষেপে যাবে,তারা কষ্ট পাবে,তারা অসহযোগিতা করবে ইত্যাদি  ভয়,আশঙ্কা থাকা মানে নিজেকে কম গুরুত্ব দেওয়া,নিজকে কম  শ্রদ্ধা করা।
৫। যা আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ নয় বা যার  জন্য আপনার সময় নেই , সে সব বিষয়ে ও  নিয়মিত "হ্যা" বলে থাকেন?
নিজকে সময় দিন,সমর্থন দিন,সম্মান দিন। অন্যদের অনুরোধ পারলে রাখবেন,তাদের জন্য সামর্থ্য মত কাজ করবেন কিন্তু তাই বলে নিজের শিডিউল বাদ দিয়ে,নিজের অগ্রাধিকার বিসর্জন দিয়ে  শুধু তাদের খুশী রাখতে  সব সময় " হ্যা" বলে যাবেন তেমনটি যেন না হয়।এটি স্বার্থপরতা নয়। এর জন্য তারা আপনাকে বদনাম দিলে,অপছন্দ করলে বরং সেটি-ই হবে তাদের স্বার্থপরতা। নিজের প্রয়োজনে কাজ করাকে পক্ষপাতিত্ব বলে না,এটি না করলেই বরং আপনি নিজকে অসম্মান করবেন
( ৩য় পর্ব- আগামীকাল)