পর্ব -১:
জীবনকে আরো প্রশান্তিময় করতে, আরো কম চাপযুক্ত রাখতে মেডিটেশন এর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। কখনো কখনো জীবনের ভার এতো বেশী হতে পারে যে আমরা ভেঙ্গে পরতে পড়ি,মুছড়ে পরতে পারি।( চাকরির চাপ,সংসারে স্বামী / স্ত্রী বা পরিবারের অন্য সদস্যদের প্রত্যাশা পূরনের চাপ,পরিক্ষা সহ নানাবিধ মানসিক চাপ)। বর্তমান পরিস্হিতি যত চাপজনক বা হতাশাজনক হোক মেডিটেশন আমাদেরকে আমাদের ভিতরের সারবত্তার সঙ্গে যোগাযোগ করিয়ে দিয়ে মনকে প্রশান্ত ও চিত্তকে চাপমুক্ত রাখে।কিন্তু মেডিটেশন করতে গিয়ে আমরা অনেকেই হতাশ হই,চিন্তামুক্ত হতে পারি না বলে ও কাঙ্খিত ফল পাই না বলে।এ জন্য নবাগতদের জন্য কিছু টিপস দিচ্ছি :
১। প্রতিদিনই মেডিটেশন করার " সময়" বের করে নিতে হবে:
মনে রাখবেন- প্রাকটিস মেকস আস পারফেক্ট। যারা নবাগত মনে রাখবেন একবার এটি শুরু করলে এটি অব্যাহত রাখা গুরুত্বপূর্ণ। তাৎক্ষনিক বেনিফিট হয়তো পাবেন না,কিন্তু যত প্রাকটিস করবেন ততই দেখবেন আপনার মন ক্রমশ " শান্ত" হয়ে আসছে।এমনকি প্রতিদিন অন্তত ৫ মিনিট হলেও মেডিটেশন চর্চা অব্যাহত রাখতে হবে।( ৫-১০ মিনিট সময় বের করতে না পারলে বুঝবেন আপনার বড় সমস্যা রয়েছে- যা দ্রত সমাধান করতে হবে)।
২। শুরু করবেন শ্বাস- প্রশ্বাস এর ব্যায়াম দিয়ে:
মনোযোগ নিবদ্ধ রাখবেন শ্বাস প্রশ্বাস এর দিকে।গভীরভাবে শ্বাস নিতে ও ছাড়তে হবে।( বুক থেকে নয়,পেট থেকে হতে হবে)। ধীরে ধীরে যত বেশীক্ষণ সম্ভব শ্বাস নেবেন।এর পর ততটুকু সময় শ্বাস ধরে রাখবেন।পরে তার চেয়েও বেশী সময় ধরে শ্বাস ফেলবেন,যেন ফুসফুস থেকে বায়ুর শেষ অংশটুকু ও বের হয়ে যায়।শ্বাস নেবার সময় ভাবুন বিশুদ্ধ বায়ুর সঙ্গে বিশ্বের সকল মঙ্গল ও কল্যাণকর জিনিস আপনার শরীর- মনে প্রবেশ করছে।আবার শ্বাস ফেলার সময় ভাবুন শরীর- মন থেকে সকল দূষিত,বিষাক্ত,অকল্যাণকর জিনিস বের হয়ে যাচ্ছে।
৩। চিন্তাকে " বয়ে " যেতে দিন:
মেডিটেশনে হতাশা আসে কেননা আমরা চাই মন চিন্তামুক্ত থাকুক।তাই চিন্তাকে বাধা দিতে, দূর করে দিতে " চেষ্টা" চালিয়ে যাই।কিন্তু যা করতে হবে তা হচ্ছে চিন্তাগুলো স্রেফ বয়ে যেতে দিন।চোখ বন্ধ করলেই দুনিয়ার হাবিজাবি চিন্তার বন্যা মনে বয়ে যাবে।এগুলোকে তাড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা যেমন করবেন না আবার এগুলোর সঙ্গে লেগে ও থাকবেন না।মনকে চিন্তাগুলো থেকে " বিযুক্ত" রাখুন।শুধু দর্শকের মতন দেখুন চিন্তার ট্রেন কিভাবে আসছে ও যাচ্ছে। চিন্তা ও আপনি এক নন।চিন্তা স্রোত আপনাকে ভাসিয়ে নিতে চাইবে, আপনি নিছক হাল্কাভাবে নিজকে মুক্ত করে শ্বাস প্রশ্বাস এর দিকে পুনরায় মনোযোগ ফিরিয়ে আনুন।
৪। একটি নির্দিষ্ট কক্ষ বেছে নিন: বাসার এমন একটি কক্ষ বেছে নিন যেখানে বাহির থেকে বেশী শব্দ না আসতে পারে।
৫। স্হানটি যেন প্রশান্তময় হয়: ডিম লাইট ব্যবহার করুন বা যেন কোন লাইটই না থাকে।কয়েকটি মোমবাতি জ্বালিয়ে রাখুন।ধূপ জ্বালাতে পারেন বা অন্য কোন সুগন্ধি তেল
৬। নিশ্চিত করুন যেন বাহির থেকে কেউ মনোযোগে বাধা সৃষ্টি করতে না পারে:
পরিবারের লোক,বন্ধু বা অন্যদের জানিয়ে রাখুন একটি " নির্দিষ্ট সময়" আপনি ব্যস্ত থাকবেন।নিজের ফোনটি ও সাইলেন্ট করে রাখুন।
No comments:
Post a Comment