কাহিনী সংক্ষেপঃ
ইশরাত জাহান,বয়স বর্তমানে ১৫। তার মা-বাবা থেকে জানা গেল যখন তার বয়স মাত্র ৪ বছর তখনি তার মধ্যে রোগ দেখা দেয়।তার তখন সারা রাত ঘুম হতো না,এদিক সেদিক দৌড়ে চলে যেতো, চিৎকার করে কাদতো,মাটিতে গড়াগড়ি করতো, ভয় পেতো,বলতো ভাল লাগে না।
এরকম দেড়-দুই বছর চলে। সাইকিয়াট্রিস্ট দেখিয়ে সুস্থ হয়ে উঠে। এরপর ৬-৭ বছরের সময় আবার রোগ দেখা দেয়।এবার ও দৌড়ায়,কিছু খায় না,কেবল কাদে,মাথায় পানি দিতে বলে,২৪ ঘন্টা ঘুমাতো না।এটিও এক-দেড় বছর চলে।এবারও সাইকিয়াট্রিস্ট দেখিয়ে ভাল হয়।
এবার ৩য় বারের মতন সে আক্রান্ত হয়।তবে এবার যোগ হয় তার মনে হয় অন্য মানুষ তাকে নিয়ে হাসাহাসি করে,তার সমালোচনা করে। সঙ্গে ডিপ্রেশন এর সব সিম্পটম। বলে দুনিয়ার কিছু ভাল লাগে না,মাকে বলে আমি কি করমু? বলে অশান্তি, কষ্ট লাগে, দুনিয়ায়তে কেবল কষ্ট আর কষ্ট, দৌড়াতে মন চায়,তবে ছোট কালের মতন দৌড়ায় না,ছটফট করে, ঘুম হয় না,মরতে চায়,বলে এতো কষ্ট মরলেই ভাল,,সারাদিন কাদে,চুল টানে, বুকটা অশান্তিতে ভরা,একদিন হুইলের গুড়া খেয়ে ফেলে। বর্তমানে অলস, নিজের যত্ন নেয় না,সারাদিন ঠোঁট কামড়ায়।
মা জানায় তার উচ্চ আকাঙ্খা, অনেক পড়তে চায়,ডাক্তার হতে চায়।কিন্তু পড়তে পারছে না বলে তার আফসোস।
পারিবারিক ইতিহাস ঃতার মা নিজেই ওসিডি রোগে ভুগছেন ;খালা ডিপ্রেশন এর রোগী ;দাদী তাদের ভাষায় জ্বীনভুতে ভুগছিলেন।
এই কেইস থেকে যা শিখলাম ঃ
১।আমাদের ধারনা বিষন্নতা /ডিপ্রেশন শিশুদের মধ্যে হয় না।তবে শিশুদের মধ্যে ও ডিপ্রেশন হয়।কিন্তু এতো অল্প বয়সে (৪ বছর) ডিপ্রেশনের রোগী আমি নিজে প্রথম দেখলাম।
২। ডিপ্রেশন সহ বড় ধরনের মানসিক রোগের অন্যতম কারন জেনেটিক (বংশের প্রভাব) । তার পরিবারে মানসিক রোগের ইতিহাস প্রকট। এজন্যই এতো অল্প বয়সে তার ডিপ্রেশন হয়।
৩। কয়েক বার সে আক্রান্ত হয়, অতি অল্প বয়সে এরোগ হয়,তাই তার ভবিষ্যত পরিনতি তত উজ্জ্বল নয়।
৪। তবে আশার কথা তার মা বাবা প্রথম থেকেই তাকে সাইকিয়াট্রিস্ট দিয়ে চিকিৎসা দিয়ে আসছেন (জ্বীন ভুতের চিকিৎসা করাননি)। তাই আশা করা যায় ভবিষ্যতেও তারা ওর চিকিৎসা চালিয়ে যাবেন।তেমন হলে ওর ভবিষ্যত অবশ্যই উজ্জ্বল
Saturday, January 12, 2019
রোগ কাহিনী -৫১ঃ ৪বছর বয়সে সে ডিপ্রেশনে আক্রান্ত হয়
Subscribe to:
Post Comments (Atom)
No comments:
Post a Comment