Sunday, January 27, 2019

সাইকিয়াট্রিস্ট এর জার্নাল -৩২ঃ রাগের এনাটমি ও প্রতিকার

(এই বই মেলায় আমার সম্ভাব্য প্রকাশিত   বই  "আবেগীয় বুদ্ধিমত্তাঃসাফল্যের মূল চাবিকাঠি " - থেকে নির্বাচিত কিছু অংশ)

বেন্জামিন ফ্রাঙ্কলিন বলেছেন ঃসব সময়ই রাগের কোন না কোন যুক্তি থাকে,তবে কদাচিৎ সেটি ভালো যুক্তি "

অর্থাৎ রেগে গেলে আমরা সবাই এর জন্য কোন না কোন যুক্তি দিয়ে নিজেকে জাস্টিফাই করতে চাই, তবে কম ক্ষেত্রেই সেটি ভালো বা সঠিক যুক্তি।

আপনি যখন গাড়ি ড্রাইভ করছেন তখন যদি অন্য কোন গাড়ি এমন ভাবে আপনার গাড়ি ক্রস করে যে ভয়াবহ কিছু ঘটে যেতে পারতো তখন আপনি দুভাবে প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারেন-

১) তৎক্ষণাৎ চিৎকার করে বলে উঠলেন "শুয়োরের বাচ্চা (সান অব বিচ)" এবং মনে উৎকন্ঠার চিন্তা স্রোত বইতে থাকে  "সে আমাকে মেরে ফেলতে চেয়েছিল -এই বাস্টার্ডকে আমি এমনি ছেড়ে দিতে পারি না।" মনে হয় এখনি তার গলা টিপে ধরি।

তখন হয়তো পিছনের আরেক গাড়ির ড্রাইভার হর্ন বাজানো শুরু করছে আপনি তার পথ আটকে রেখেছেন বলে।হয়তো রাগের চোটে ঐ ড্রাইভারকে ও কড়া ভাষায় কিছু বলে ফেললেন।

২)আবার আপনি "যথাযথ " রাগও প্রকাশ করতে পারেন,যদি আপনার চিন্তা প্রনালীতে এরকম চিন্তা কাজ করে যে "হয়তো সে আমাকে
ঠিকমতন দেখতে পায়নি বা এরকম কেয়ারলেস গাড়ি চালানোর কোন যুক্তি সঙ্গত কারন আছে

।যেমন জরুরি কারণে হাসপাতালে যাওয়া -ইত্যাদি। এরকম সংবেদনশীল ও সমব্যথী (এমপ্যাথি) চিন্তা থাকলে  বা উন্মুক্ত মন নিয়ে ভাবলে ব্রেইনে ক্রোধ সঞ্চারের যে " শর্ট সার্কিট " সেটি বাইপাস করা যায়।

বিখ্যাত মনোবিজ্ঞানী মিসেস টাইসি বলেন "রাগ হচ্ছে তেমন আবেগ যেটি আমরা সবচেয়ে কম নিয়ন্ত্রণ করতে পারি।
তার মতে রাগ হচ্ছে নেতিবাচক আবেগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সিডাকটিভ বা প্রলুব্ধকর,মনোলোভা।

এটি মনের ভিতর এমন অন্তর্গত সংলাপ তৈরি করে যে আমিই সঠিক, আমার উপর অন্যায় করা হয়েছে। এভাবে রেগে যাওয়ার স্বপক্ষে সবচেয়ে অনুকূল ও গ্রহণযোগ্য যুক্তি মনকে দিয়ে থাকে।

এছাড়া যেখানে অশান্তি অবসাদ আনে সেখানে রাগ হচ্ছে " বল-বৃদ্ধি জনক" -এনার্জাইজিং।

এসব কারনে মনে করা হয়  রাগ "নিয়ন্ত্রণ অযোগ্য " এবং রাগ প্রকাশ এক ধরনের "আবেগ মুক্তি "- তাই এটি মঙ্গলজনক।

কিন্তু আসলেই কি তাই?
( পর্ব-২ঃ আগামীকাল)

No comments:

Post a Comment